নতুন সরকারের প্রথম কূটনৈতিক ব্রিফিং কাল


নতুন সরকারের প্রথম কূটনৈতিক ব্রিফিং কাল। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অনুষ্ঠেয় সেই ব্রিফিংয়ের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। এ জন্য নতুন করে স্ক্রিপ্ট তৈরি করতে হচ্ছে। ঠিক ১০ দিন আগে অর্থাৎ ১লা আগস্ট ঢাকার রাজপথ যখন রক্তাক্ত তখন সর্বশেষ কূটনৈতিক ব্রিফিং হয়েছিল। তাছাড়া ৫ই আগস্ট শেখ হাসিনার ১৬ বছরের রাজত্বের সূর্য যখন প্রায় অস্তমিত ঠিক সেই সময়েও আরেকটি ব্রিফিং আয়োজনে ব্যস্ত ছিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ছাত্র-জনতার সর্বাত্মক আন্দোলন দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্বিচারে গুলি, হত্যা তথা নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে বিদেশি বন্ধু উন্নয়ন সহযোগীদের উদ্বেগ নিরসনের টার্গেটে ছিল সেই ব্রিফিং। যেখানে সরকারের দমন-পীড়নের স্বপক্ষে নানা যুক্তি তুলে ধরে সফাই বয়ান তৈরি করেছিলেন কর্মকর্তারা।


যেকোনো ব্রিফিংয়ে ঢাকাস্থ রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার এবং অন্যান্য মিশন প্রধানদের আমন্ত্রণ জানানোর দায়িত্ব বরাবরই রাষ্ট্রাচার প্রধানের। আর স্ক্রিপ্ট বা বয়ান তৈরির কাজ করছিল ৫ সদস্যের টিম। যার মধ্যে ৩ জন মহাপরিচালক এবং দু’জন পরিচালক। অতি উৎসাহী ওই কর্মকর্তারা তাদের মেধা খাটিয়ে সংক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতাকে ‘বিএনপি’, ‘জামাত-শিবির’, ‘সন্ত্রাসী’ এবং ‘উগ্রবাদী’ ট্যাগ দিয়েছিলেন।


তাদের দমনে সরকারের অ্যাকশন জরুরি ছিল বলে প্রচার চালিয়েছিলেন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে অন্তবর্তীকালীন সরকারের শপথের রাতেই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বড়সড়ো পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু রাষ্ট্রাচার প্রধান এবং স্ক্রিপ্ট তৈরির দায়িত্বপ্রাপ্ত সেই ৫ কর্মকর্তা স্বপদে বহাল রয়েছেন। তারাই নতুন সরকারের প্রথম কূটনৈতিক ব্রিফিংয়ের যাবতীয় প্রস্তুতি কর্মে দায়িত্ব পেয়েছেন।

যেসব কর্মকর্তা ১০ দিন আগে ছাত্র-জনতা তথা সাধারণ মানুষের আন্দোলনকে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীদের কাজ বলেছিলেন তারা আগামীকাল কি স্ক্রিপ্ট তৈরী করবেন তা দেখার অপেক্ষায় সেগুনবাগিচার অন্যরা। তাছাড়া, যে রাষ্ট্রাচার প্রধান শেখ হাসিনা সরকারের গণহত্যার সাফাই গেয়েছেন তার স্বপদে বহাল থাকাটাও বিস্ময়কর।


পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, সেই ব্রিফিংকে সামনে রেখে নতুন সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা  মো. তৌহিদ হোসেন শনিবার ছুটির দিনে অফিস করেছেন। তিনি পররাষ্ট্র সচিব এবং অন্য এক সচিবকে নিয়ে রুদ্বদ্বার বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে কোন পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নিয়েছে, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বর্তমান অবস্থা, সরকারের উদ্যোগ বিশেষত: সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিতের বিষয়টি ব্রিফিংয়ে তুলে ধরার সিদ্ধান্ত হয়েছে।