মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জান্তা সমর্থিত বাহিনী ও সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সংঘর্ষে ১৩ জন মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) সদস্য বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। আজ বুধবার সকাল ৭টার দিকে তারা কাঠের নৌকায় চেপে কক্সবাজারের টেকনাফ সাবরাং সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ করেন। পরে সীমান্তে টহলরত বিজিবির কাছে আত্মসমর্পণের পর তাদের হেফাজতে নেওয়া হয়।
টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ গোলযোগের কারণে বাংলাদেশ সীমান্তে অদ্ভুত পরিস্থিতি বিরাজ করে। এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বিজিবি সীমান্তে দিন-রাত টহল জোরদার করা হয়েছে। টেকনাফ সীমান্তে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাব্যবস্থা করা হয়েছে। মিয়ানমার পরিস্থিতিতে সীমান্তে অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিরোধে বিজিবি যথেষ্ট সোচ্চার রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন,‘মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতময় পরিস্থিতিতে আজ সকালে সাবরাং সীমান্ত দিয়ে ১৩ জন মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) সদস্য অনুপ্রবেশ করেছেন। একটি পিস্তল ও ২৫ রাউন্ড গোলাবারুদসহ আত্মসমর্পণের পর তারা বিজিবির হেফাজতে রয়েছেন। এ ছাড়া এর আগে আসা ১১০ জন বিজিপি সদস্যসহ বর্তমানে ১২৩ জন বিজিপি সদস্য আমাদের (বিজিবি) হেফাজতে রয়েছেন। তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছি, অচিরেই তাদের সে দেশে ফেরত পাঠানো হবে।’
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু এলাকার বাসিন্দা হামিদ উল্লাহ বলেন, ‘গত এক সপ্তাহ ধরে মংডু শহর ও কাছের এলাকাগুলোতে আরাকান আর্মি ও জান্তা সমর্থিত বাহিনীর মধ্যে তুমুল সংঘাত চলছে। মংডুর বেশির ভাগ লোকজন নিরাপত্তার স্বার্থে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। এর আগে দুই বাহিনীর গোলাগুলি ও বোমা হামলায় দুই শতাধিক রোহিঙ্গা ও সাধারণ মানুষের প্রাণ হানির ঘটনা ঘটেছে। অনেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করছে।’
টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপের বাসিন্দা জাকারিয়া বলেন, ‘গত সপ্তাহে রাখাইন সংঘাতের ঘটনায় রোহিঙ্গাদের কয়েকটি নৌকা বাংলাদেশে ঢুকেছে। তাদের বেশির ভাগই উত্তাল বঙ্গোপসাগার পাড়ি দিয়ে ছোট নৌকায় চেপে ঝুঁকি নিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে। এ সময় রোহিঙ্গাদের তিনটি নৌকা ডুবির ঘটনা ঘটেছে। তাদের মধ্যে টেকনাফ উপকূল থেকে ৪৪ জনের মরদেহ ভেসে আসলেও আরও অর্ধশতাধিক রোহিঙ্গা নিখোঁজ ছিল।’