পঞ্চগড়ে এক মা ও তার দুই ছেলেসহ একই পরিবারের তিন সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বুধবার (১৪ আগস্ট) রাতে পঞ্চগড় জেলার আটোয়ারী উপজেলার বলরামপুর ইউনিয়নের কুরুলিয়া গ্রামের দলুয়াদিঘী এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। বাংলা ট্রিবিউনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আটোয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুসা মিয়া।
নিহতরা হলেন বোদা বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী সেলিম শেখের স্ত্রী তাসলিমা আক্তার (৩৫) এবং তার দুই ছেলে সৈকত (১৩) ও সায়হাম (৯)। তিন জনকেই এলোপাতাড়ি ধারালো অস্ত্র দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব বা ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে এসে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করছেন।
রাতেই এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের চিত্র দেখতে শত শত মানুষ ওই বাড়িতে ভিড় করেছেন। তবে এখনও এই হত্যাকাণ্ডের কোনও রহস্য জানতে পারেনি পুলিশ। তবে সম্ভাব্য অপরাধীদের গ্রেফতারে অভিযান পরিচালনা করছেন তারা। নির্মম এ ঘটনা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বোদা বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী সেলিম শেখ দোকান বন্ধ করে রাত এগারোটা থেকে সোয়া ১১টার মধ্যে বাসায় ফেরেন। এ সময় তিনি বাড়িতে প্রবেশের প্রধান ফটক খোলা দেখতে পান। পরে ঘরের মূল দরজাও খোলা পান তিনি। ঘরে প্রবেশ করতেই রক্তে ভেজা নিথর তিনটি মরদেহ মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন সেলিম। এ সময় তার আর্তচিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন মেঝেতে পড়ে থাকা তিনটি লাশ দেখতে পান। স্থানীয়রা প্রথমে পুলিশ পরে সেনাবাহিনী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের খবর দেন।
স্থানীয়রা জানান, সেলিম শেখ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সমর্থক তবে বর্তমানে সরাসরি রাজনীতি করছেন না। হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচার দাবি করেছেন নিহতের পরিবার ও স্বজনরা।
বলরামপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘খবর পেয়ে সেলিম শেখের বাসায় আসি। ড্রয়িং ও ডাইনিং সম্মিলিত একটি ঘরের মেঝেতেই তিন জনের মরদেহ পড়ে ছিল। বিষয়টি নির্মম ও বেদনাদায়ক। যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করবে প্রশাসন এটাই প্রত্যাশা।’
আটোয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুসা মিয়া জানান, মরদেহগুলোর সুরতহাল এবং আলামত সংগ্রহ করার পর ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হবে। অপরাধীদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। পুলিশ ও সিআইডি বিষয়টি তদন্ত করছে।