নেই দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ। কমেছে ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানি। ফলে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে ঢুকছে চীনা ও পাকিস্তানি পেঁয়াজ। এসব পেঁয়াজের দাম দেশি পেঁয়াজের তুলনায় কম হলেও দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ না থাকায় বেড়ে গেছে দাম।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দেশের বৃহত্তম ভোগ্যপণ্যের এ পাইকারি বাজারে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ নেই বললেই চলে। আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৯৫ থেকে ৯৭ টাকায়। পাকিস্তানি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। চীনা বড় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। যদিও দেশি পেঁয়াজ যখন ৯৮ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল, তখন এসব পেঁয়াজের দাম ছিল কেজিপ্রতি দুই থেকে তিন টাকা কম।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত দুই সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজের চালান আসেনি বাজারে। পাশাপাশি কমেছে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি। সব মিলিয়ে পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।
খাতুনগঞ্জের হামিদ উল্লাহ মার্কেট আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ না থাকায় এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চীন ও পাকিস্তানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে আড়তে। রয়েছে ভারতীয় পেঁয়াজও। তবে মানুষের চাহিদা বেশি দেশি পেঁয়াজে। সেটি না থাকায় দাম একটু এদিক-সেদিক হচ্ছে। তুলনামূলকভাবে দাম ঠিক আছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপ-পরিচালক ড. মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, গত সপ্তাহে চীন ও পাকিস্তানের পেঁয়াজের দুটি চালান খালাস হয়েছে। পেঁয়াজ পচনশীল পণ্য হওয়ায় যাতে দ্রুত খালাস হয় সে লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি।
এদিকে, বাজারে অস্থিরতাকে দাম বাড়ানোর ‘নতুন’ কৌশল মনে করছে ভোক্তাদের জাতীয় সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।ক্যাবের কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বলেন, পেঁয়াজের যখন সরবরাহ কমে যায়, তখন দাম বাড়ানোর জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু যখন সরবরাহ বাড়ে, তখন দাম কমনোর চিন্তা তাদের থাকে না। এখন দেশি পেঁয়াজ নেই বলে দাম বাড়ানোর নতুন উপায় বের করছে তারা।
তিনি আরো বলেন, অন্যান্য সময় যখন পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে ভারত সরকার, তখন সঙ্গে সঙ্গে আমাদের এখানে দাম বেড়ে যায়। এখন তো সরবরাহ আছে, এরপরও ভারতীয় পেঁয়াজের দাম কমবে না কেন?
একই দাবি কয়েকজন পাইকারি ব্যবসায়ীরও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেই ব্যবসায়ীরা বলেন, গত বছরের শেষের দিক থেকে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ ছিল। এরপর থেকেই পেঁয়াজের দাম ওঠানামা শুরু হয়। এখন বৈধপথে ভারতীয় পেঁয়াজ বাজারে এলেও দাম কমেনি। বর্তমানে বাজারে দেশি পেঁয়াজের সংকট। সেই হিসেবে ভারতীয় পেঁয়াজের দামও কমছে না।