নাটোর: পতন হওয়া সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘বাংলার আরেক ঘসেটি বেগম’ মন্তব্য করে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেছেন, দেশে হাজার হাজার ছাত্র-জনতাকে হত্যা করে ভারতে পালিয়ে গিয়ে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন শেখ হাসিনা। তাকে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে এনে জনগণের সামনে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
ছাত্র-জনতাকে হত্যার দায়ে আওয়ামী লীগকে অতি দ্রুত নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) দুপুরে শহরের আলাইপুরে জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সব বীর শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়। কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রহিম নেওয়াজ।
দুলু বলেন, আওয়ামী লীগ ২০০৮ সাল থেকে চার বার বিনা ভোটে সারাদেশে এমপি বানিয়েছিল। তারা কখনো নিরপেক্ষ নির্বাচন দেয়নি। বিএনপি গত ১৫ বছর থেকে ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করেছে। বিএনপিকে কোথাও স্বাভাবিকভাবে স্বাধীনভাবে কোনো কর্মসূচি করতে দেয়নি আওয়ামী লীগ। হামলা-মামলা দিয়ে নাজেহাল করেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শত শত ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে দেশ এখন মুক্ত স্বাধীন।
দুলু এসব বীর শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।
বর্তমান সরকারকে অনুরোধ জানিয়ে রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার দেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচার বন্ধ করেছিল, তার ছবি পর্যন্ত ছাপতে দিতো না। এখন পাশের দেশে বসে ঘসেটি বেগম ও তার ছেলে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা করছে, দেশে এদের বক্তব্য প্রচারণা বন্ধ করতে হবে। দেশের মানুষ আর এদের বক্তব্য শুনতে চায় না, তাদের ছবিও দেখতে চায় না। আমাদের দাবি, ছাত্র-জনতাকে যারা খুন করেছে, সেসব খুনির ছবি যে সমস্ত টেলিভিশন বা যে সমস্ত পত্রিকা প্রকাশ করবে, তা আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার সময় বিরোধিতার জন্য তখন জামায়াতকে নিষিদ্ধ ঘোষণা হয়েছিল। এখন দ্বিতীয় স্বাধীনতার সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শত শত ছাত্র-জনতাকে হত্যার দায়ে আওয়ামী লীগকে অতি দ্রুত নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।
দুলু আরও বলেন, যে ভোটে খালেদা জিয়া অংশ নেবেন, যে ভোটে তারেক রহমান, ডা. জোবাইদা রহমান, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু অংশ নিতে পারবেন, সে ভোট বাংলাদেশে হবে। এ ভোটের জন্যই তো আমরা আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি। খুব দ্রুত এ নির্বাচন বাংলাদেশের মাটিতে হবে। কিন্তু বর্তমান অন্তবর্তী সরকারের কাছে আমার ও নাটোরের জনগণের দাবি, সব হত্যা বিচার করতে হবে। গত ১৫ বছর আমাদের নেতা-কর্মীদের খুনি হাসিনা সরকারের যে সমস্ত সন্ত্রাসী এমপি-মন্ত্রী হত্যা করেছে তাদের গ্রেফতার করে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।
এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য সাবেক এমপি অধ্যাপক কাজী গোলাম মোর্শেদ, জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক ফরহাদ আলী দেওয়ান শাহিন ও কাজী শাহ আলম, পৌর বিএনপির সভাপতি এমদাদুল হক আল মামুন ও সাধারণ সম্পাদক বাবুল চৌধুরী, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আসাদুজ্জামান আসাদ, জেলা যুবদল সভাপতি এ হাই তালুকদার ডালিম, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি কামরুল ইসলাম, সদর থানা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আলম আবুল প্রমুখ।