ঢাকেশ্বরী মন্দিরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “যেটা বললেন, ‘আমরা আইনের অধিকার পাই না; বিচার ব্যবস্থা আমাদের দিকে তাকায় না, পুলিশ আমাদের দিকে তাকায় না- কিছুই আমাদের দিকে তাকায় না’ কারণ আমি অধিকারটা প্রতিষ্ঠা করতে পারি নাই। আমাদের নীতিটা আমরা প্রতিষ্ঠা করেতে পারি নাই। প্রাতিষ্ঠানিক আয়োজন করেছি, এটা বায়াসড একটা প্রতিষ্ঠান।
“আপনি যত কিছুই বলেন, একটা খোপ করতে আরম্ভ করবেন, তারা মজা পেয়ে যাবে। ওই মজার খেলাতে আমাদেরকে আর নিয়ে যাইয়েন না। আমরা এসেছি- এক মানুষ, এক অধিকার। এর মধ্যে কোন পার্থক্য করা যাবে না। করতে পারলাম কি পারলাম না, সেটা পরে বিচার করেন, যদি না পারি আমাদেরকে দোষ দিয়েন।”
বাংলাদেশকে ‘একটি পরিবার’ হিসেবে বর্ণনা করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, পরিবারের মধ্যে কোনো প্রার্থক্য তৈরি করা বা বিভেদ করার প্রশ্নই আসে না।
“আমাদের বাংলাদেশের মানুষ, বাংলাদেশি এটা আমরা নিশ্চিত করতে চাই, এটা নিয়ে আর কোন বিভেদ যেন না হয়। আমাদের গণতান্ত্রিক যে আকাঙ্ক্ষা, সেখানে আমরা বিবেচিত মুসলমান হিসেবে নয়, হিন্দু হিসেবে নয়, বৌদ্ধ হিসেবে নয়- মানুষ হিসেবে। আমাদের অধিকারগুলো নিশ্চিত হোক।”
মুহাম্মদ ইউনূস প্রশ্ন রাখেন, ন্যায়বিচার হলে কে বিচার পাবে না? কার সাধ্য আছে সেখানে বিভেদ তৈরি করার?
“এই সম্প্রদায় হলে ওই আদালতে, এ সম্প্রদায় হলে ওই আদালতে যাব? আইন একটা, এমনটা হতে পারে না।”
নিজেদের সংখ্যালঘু হিসেবে না দেখে গণতান্ত্রিক অধিকার, বাক স্বাধীনতা, মানবিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করার কথা বলেন ইউনূস।
তিনি বলেন, “এটাই হলো আমাদের মূল লক্ষ্য। আপনারা যদি টেনে টেনে নিয়ে আসেন, আমি অমুক, আমি তমুক- এটা আবার পুরানা খেলায় চলে গেলেন। এটা আপনাদের শিকার করার জন্য যারা বসে আছে, তারা এগুলো শিকার করবে।
“আপনারা বলেন– ‘আমরা মানুষ, আমি বাংলাদেশের মানুষ, আমার সাংবিধানিক অধিকার এই আমাকে দিতে হবে’- সব সরকারের কাছে এটাই চাইবেন আপনারা, আর কিচ্ছু চাইয়েন না।”
গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যক্রমের প্রসঙ্গ টেনে ড. ইউনূস বলেন, “আপনি শুনবেন না আমরা (কখনো) হিন্দু পাড়া বলে বাদ দিয়ে গেছি; মুসলমান পাড়ায় চলে গেছি। একসঙ্গে গেছি, একভাবে গেছি।”