“আহতদের মধ্যে বা হামলার শিকার যদি কেউ অভিযোগ দেন, তাহলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে,” বলেন ধানমন্ডি মডেল থানার ওসি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার শোকাবহ দিনে ঢাকার ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে ‘আটক’ ২২ জনকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।
পরিবারের হেফাজতে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, কারও বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। যাদের অনেকেই এ দিন 'লাঠিসোঁটা' নিয়ে অবস্থান করা ছাত্র-জনতার হামলার শিকার হয়ে আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার রাতে ধানমন্ডি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “১৫ অগাস্ট দিনব্যাপী ৩২ নম্বর সড়কের আশপাশের এলাকায় লাঠিসোঁটা নিয়ে অবস্থান করে অনেক লোকজন। তারা ২২ জনকে ধরে আমাদের কাছে দিয়েছিল, যাদের প্রায় সবাই কম-বেশি আহত অবস্থায় ছিলেন।”
“পরে পরিবারের লোকজন এলে তাদের পরিবারের কাছে দিয়ে দিয়েছি। কেউ অভিযোগ না করায় তাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি।”
যাদের হেফাজতে নেওয়া হয়েছিল তারা কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী কি না, জানতে চাইলে ওসি বলেন, "তারা রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী সন্দেহে আটক করে আমাদের কাছে দেয়, পরে আমরা তাদেরকে হেফাজতে নেই।"
তারা কীভাবে আহত হলেন জানতে চাইলে ওসি বলেন, "৩২ নম্বরে উপস্থিতি ছাত্র-জনতার মারধরেই তারা আহত হয়েছেন।"
“কেউ কোথাও যেতে চাইলে, অন্য কারও এভাবে হামলা করার অধিকার নেই, এমনটি করা উচিত হয়নি” বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এ অবস্থায় হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, জানতে চাইলে এমরানুল ইসলাম বলেন, “আহতদের মধ্যে বা হামলার শিকার যদি কেউ অভিযোগ দেন, তাহলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এদিকে, বৃহস্পতিবার ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েছিলেন যারা, তাদের মধ্যে অন্তত ৩০ জনকে একটি কলেজে ‘আটকে’ রেখেছিল বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীরা। পরে তাদের উদ্ধার করে গাড়িতে করে নিয়ে যান সেনাবাহিনী ও বিজিবির সদস্যরা।
এ দিন ৩২ নম্বরে শ্রদ্ধা জানাতে আসা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের অনেকেই হামলার শিকার হয়েছেন; আহতদের অনেককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আন্দোলনকারীরা শুক্রাবাদ মোড় থেকে ৩২ নম্বর ও মেট্রো শপিংমলের সামনে অবস্থান নেন। লাঠি ও পাইপ হাতে ৩২ নম্বর সড়কে লেকের পাড়ও তারা দখলে রাখেন।
তারা বঙ্গবন্ধুর বাড়ির সামনে কাউকে প্রবেশ করতে দেয়নি। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দেওয়ার জন্য বা আওয়ামী লীগ পরিচয়ে কেউ এলে তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়। একটা সময় যারাই শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য সেখানে গেছেন, তাদেরকেই মারধর করা হয়েছে।
বিশেষ করে কালো পোশাক বা ব্যাজ পরা কাউকে দেখলে ধাওয়া করা হয়েছে। সন্দেহ হলে মোবাইল ফোনও ঘাঁটাঘাটি করতেও দেখা গেছে। অনেককে হাতে, কোমরে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা অবস্থা দেখা গেছে।
৩২ নম্বরে শ্রদ্ধা জানাতে গেলে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীকেও হেনস্তা করা হয়েছে বলে খবর রয়েছে। ৩২ নম্বরের বাড়িতে যাওয়া নেতাকর্মীদেরকে বেঁধে নির্যাতনকে ‘স্বাধীনতা হরণ’ বলে মন্তব্য করেছেন মুক্তিযুদ্ধের এই বীর।
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা বক্তব্য দিয়ে এ ধরনের কাজ থেকে সবাইকে বিরত থাকতে বলেছেন।
সূত্র: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম