রাজধানীর নিউমার্কেট থানার হত্যা মামলায় রিমান্ডে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের কাছ থেকে অনেক অজানা ও চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানিয়েছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে দেশে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরির জন্য সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দায়ী।
শুক্রবার ডিএমপি কমিশনার মাইনুল হাসান এসব তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, দেশে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনার বিষয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন সালমান এফ রহমান। তবে অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে জানতের চাওয়া হলে কোনো তথ্য দেননি, সেই সময় নির্বিকার ছিলেন তিনি।
ডিবি পুলিশ জানিয়েছে, সালমান এফ রহমান মানসিক ট্রমার মধ্যে রয়েছেন। তিনি বিশ্বাসই করতে চাচ্ছেন না যে এত তাড়াতাড়ি আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হবে।
এদিকে মামলা সূত্রে জানা গেছে, যে মামলায় সালমান এফ রহমান রিমান্ডে আছেন ঐ মামলায় কোনো আসামির নাম নেই। অজ্ঞাত হিসেবে বিএনপি ও জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।
ডিএমপি জানায়, গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির অপরাধ শুধু মামলার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। শেয়ারবাজারসহ অনেক অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারিতে জড়িত সালমান এফ রহমান। তাই তাকে জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে হত্যা মামলার পাশাপাশি অর্থনৈতিক বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। রিমান্ডে হত্যা মামলার পাশাপাশি বিগত সরকারের অপকর্ম ও দুর্নীতিসহ নানা বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তিনি অনেক অজানা ও চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন।
এ বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার মাইনুল হাসান বলেন, মামলাটি হলো ইনফরমেশন রিপোর্ট। তদন্তের পরই প্রকৃত সত্য উঠে আসবে। সম্প্রতি যেসব ঘটনা ঘটেছে সেগুলো এমনিতেই হয়নি। কী কারণে ঘটেছে, কেন ঘটেছে সবই তদন্তে উঠে আসবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর আত্মগোপনে চলে যান আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিসহ বড় বড় নেতা ও সরকারি কর্মকর্তারা। কেউ কেউ আবার দেশ ছেড়ে পালানোর সময় গ্রেফতারও হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।
গত ১৩ আগস্ট ছদ্মবেশে পালিয়ে যাওয়ার সময় রাজধানীর সদরঘাট থেকে তাকে আটক করে পুলিশ। এ সময় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককেও আটক করা হয়। পরদিন রাজধানীর নিউমার্কেট থানায় হকার শাহজাহান আলী হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাদের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। রিমান্ড মঞ্জুরের পর তাদের হেফাজতে নেয় ডিবি পুলিশ।