বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন: সরে গেলেন জগন্নাথের প্রধান সমন্বয়ক নূর নবী



চাকরিতে কোটা নিয়ে আন্দোলনে নেমে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের নেতৃত্ব দেওয়া সংগঠন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘প্রধান সমন্বয়কের’ পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন মো. নূর নবী।


সমন্বয়ক হিসেবে না থাকলেও যে কোনো আন্দোলন-সংগ্রামে সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করার অঙ্গীকার করেছেন তিনি।


বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী নবী শনিবার ফেইসবুক পোস্টে বলেন, “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন সমন্বয়ক হিসেবে শুরু থেকেই সকল আন্দোলনের সাথে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছি। আমাদের প্রাথমিক চাওয়াগুলো পূরণ হলেও আমাদের বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে শহীদরা যে রক্ত দিয়েছেন তা এখনো পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়নি।


“শহীদদের আত্মত্যাগে অর্জিত এই স্বাধীন বাংলাদেশে যে কোনো বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আমি একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করব।”


তিনি বলেন, “আজ থেকে আমি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পদ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলাম। ব্যক্তি স্বার্থ বিহীন এই আন্দোলনে শুরু থেকেই মাঠে থেকেছি। ময়দানে ছাত্রলীগের বর্বরোচিত হামলার স্বীকার হয়েছি, ময়দান থেকেই গুম হয়েছি এবং পৈশাচিক নির্যাতনের শিকার হয়েছি, কারাগারে গিয়েছি। এই সব কিছুর ঊর্ধ্বে আপনাদের ভালোবাসা পেয়েছি। সে ভালোবাসার মর্যাদা রক্ষা করার জন্য আমি সর্বদা আপনাদের পাশে থাকব।”


আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ জুলাই নবীকে ‘শিবির’ আখ্যা দিয়ে ক্যাম্পাস থেকে ঢাকার মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে অকথ্য নির্যাতনের পর ‘সাজানো’ মামলায় তাকে কারাগারে পাঠানো হয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি।


গণআন্দোলনে সরকার পতনের পর গত ৬ অগাস্ট কারাগার থেকে মুক্তি পান নূর নবী। তারপর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন কয়েক দিন।


পরে ৯ অগাস্ট বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ফিরে শহীদ মিনারে সংবাদ সম্মেলন করেন এই শিক্ষার্থী। ডিবি অফিসের নির্যাতনের বর্ণনা তিনি সেখানে তুলে ধরেন।


নবীকে ডিবি পুলিশ আটক করলেও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এগিয়ে নিতে এ বিশ্ববিদ্যালের কেন্দ্রীয় ইউনিট ঘোষিত ২৭ সদস্যের অফিসিয়াল সমন্বয়ক প্যানেলে সবার প্রথমে নবীর নাম রাখা হয়।


এদিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঁচ সমন্বয়কও পদত্যাগ করেছেন শুক্রবার।


বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ- চাকসুতে এক সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের পদ ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়ের দেন সমন্বয়ক সুমাইয়া সিকদার ও চার সহ-সমন্বয়ক আল মাসনূন, ধ্রুব বড়ুয়া, সাইদ্যুজামান রেদুয়ান এবং ঈশা দে।


সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে সমন্বয়করা ‘জবাবদিহি’ করছেন না এবং নানা ধরনের ‘সাফাই’ দিচ্ছেন বলে তারা অভিযোগ করেছেন